কেউ করেন শখে। কেউ করেন দরকারে। কিন্তু কাজটা এমন যে দরকারে পড়ে করলেও মন্দ লাগে না। বিশ্বজুড়েই মেকআপ বিষয়টা এখন নিত্যপ্রয়োজনীয়। নাচতে না জানলে যদি হয় উঠানের দোষ, তবে সাজতে বা সাজাতে না জানলে দোষ হবে কার? আসলে কমবেশি নিজেকে বা নিজের গৃহকোণ সাজতে জানেন সবাই। তবে সুন্দর সাজের পেছনের রহস্যটা লুকিয়ে থাকে সঠিক রুচি এবং উপাদান নির্বাচনে, সঙ্গী থাকে একজন মেকআপ আর্টিস্ট বা ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের। তেমনিই এক সৌন্দর্যের কারিগরের গল্প বলছি এবার। ছোটবেলায় লিপস্টিক দিয়ে মানুষের মুখের ছবি আঁকা এরপর নিজের পরিবারের মা-বোনদের সাজাতে গিয়েই তরুণ বয়সে হয়ে ওঠেন মেকআপ আর্টিস্ট। ধীরে ধীরে মেকআপ নিয়ে সমৃদ্ধ হতে থাকে অভিজ্ঞতা। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে মেকআপ নিয়ে কাজ করছেন আফরোজা হাসান। অফিসিয়ালি মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৩ এর শুরুর দিকে। যে সকল তরুন মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইছে তাদের বিষয়ে পরামর্শ দেন মেকআপ আর্টিস্ট আফরোজা হাসান।
প্রশ্ন: একজন মেকআপ আর্টিস্ট কী ধরনের কাজ করেন? আফরোজা হাসান: আপনি যদি শুধুমাত্র মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে নিয়োগ পান সেক্ষেত্রে আপনাকে মেকওভার বা সাজসজ্জার কাজ বাধ্যতামূলকভাবে করা লাগবে এবং সেক্ষেত্রে আপনার ক্যারিয়ারের বিশেষত্বের জায়গাও হবে সেটি। মেকআপ আর্টিস্ট হলে কসমেটিকস ও কার জন্য কেমন সাজসজ্জা করতে হবে সে ব্যাপারে ভালো ধারণা থাকা জরুরী। বিউটি কনসালট্যান্ট এবং মেকআপ আর্টিস্ট দুই ক্ষেত্রেই আপনাকে মানুষের ত্বক সম্পর্কে জানতে হবে। কোন ক্রেতার জন্য কোন ধরনের কসমেটিকস এবং মেকওভার ভালো হবে সেটা জানার দায়িত্ব আপনার উপর বর্তাবে এক্ষেত্রে; ক্রেতাদেরকে তাদের পছন্দসই এবং তাদের জন্য ভালো এমন কসমেটিকস সামগ্রী পরামর্শ দিতে হয়।
প্রশ্ন: একজন মেকআপ আর্টিস্টের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়? আফরোজা হাসান: কসমেটিকসের ক্ষেত্রে নতুন পণ্যের আনাগোনা বেশ সাধারণ একটি ব্যাপার। সেক্ষেত্রে একজন মেকআপ আর্টিস্ট বা বিউটি কনসালট্যান্টকে নতুন পণ্যগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হয় এবং নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে হয়। মানুষের ত্বকের ধরন নিয়ে সম্যক ধারণা থাকা বেশ জরুরী। একজন ক্রেতার জন্য কোন ধরনের পণ্য ভালো হবে সে ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান থাকা গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্রেতাকে সে অনুযায়ী পরামর্শ দেওয়া বেশ জরুরী। কসমেটিকস পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যের গায়ে যে ধরনের তথ্যগুলো দেওয়া থাকে তা পড়ে বুঝতে পারার ক্ষমতা থাকতে হবে। যেসকল পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হয় এবং মেকওভারের ক্ষেত্রে একজন ক্রেতাকে কী ধরনের পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে সে ব্যাপারে পরিস্কার ধারণা দিতে হয়। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট এবং অন্য যে কোন উপায়ে কোন পণ্যের ধরন কেমন, কোন পণ্য কোন ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যবহৃত হয় সে ব্যাপারে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। তরল বা লিকুইড ভিত্তিক মেকওভার নিয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে। বিউটি কনসালট্যান্টের ক্ষেত্রে যত বেশি সম্ভব পণ্য বিক্রয় করার একটি বিষয় থাকে। এক্ষেত্রে ক্রেতার সাথে ভালো যোগাযোগ ক্ষমতা থাকতে হবে।
প্রশ্ন: একজন মেকআপ আর্টিস্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে? আফরোজা হাসান: মেকআপ আর্টিস্টের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট পদবিন্যাস নেই বরং বিষয়টি একেবারেই প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ। মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে নিয়োগ পেলে কিছু সময় পরে পদোন্নতি পেয়ে সাধারণত সিনিয়র মেকআপ আর্টিস্ট এবং পরবর্তীতে সহকারী পার্লার ম্যানেজার ও সর্বোচ্চ পার্লার ম্যানেজার হিসেবে আপনি কাজ করতে পারেন। বিউটি কনসালট্যান্টের ক্ষেত্রে সাধারণত পদবিন্যাসের পরের পদগুলো হয় – সিনিয়র বিউটি কনস্যালট্যান্ট, অফিস এক্সকিউিটভি, সিনিয়র অফিস এক্সকিউিটভি, সহকারী ব্যবস্থাপক এবং ব্যবস্থাপক বা জেনারেল ম্যানেজার।
প্রশ্ন: একজন মেকআপ আর্টিস্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে? আফরোজা হাসান: মেকআপ আর্টিস্টের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট পদবিন্যাস নেই বরং বিষয়টি একেবারেই প্রতিষ্ঠানসাপেক্ষ। মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে নিয়োগ পেলে কিছু সময় পরে পদোন্নতি পেয়ে সাধারণত সিনিয়র মেকআপ আর্টিস্ট এবং পরবর্তীতে সহকারী পার্লার ম্যানেজার ও সর্বোচ্চ পার্লার ম্যানেজার হিসেবে আপনি কাজ করতে পারেন। বিউটি কনসালট্যান্টের ক্ষেত্রে সাধারণত পদবিন্যাসের পরের পদগুলো হলো সিনিয়র বিউটি কনস্যালট্যান্ট, অফিস এক্সকিউিটভি, সিনিয়র অফিস এক্সকিউিটভি, সহকারী ব্যবস্থাপক এবং ব্যবস্থাপক বা জেনারেল ম্যানেজার। যারা বেশ কিছুদিন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করেন তারা প্রায় ৬-৭ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের পার্লার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এক্ষেত্রে শুরুতে হয়তোবা আপনাকে কিছুটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হতে পারে, তবে কাজের মান ভালো হলে কিছু সময় পরে হয়তোবা আপনার প্রতিষ্ঠানও দেশের পার্লার বা বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে একটি বড় নাম হতে পারে। বর্তমানে বিদেশ থেকে কসমেটিকস পণ্য আমদানী করে এমন নতুন অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে রয়েছে এবং নতুন অনেকেই এক্ষেত্রে ব্যবসা করার চিন্তাভাবনা করছেন। ভালো মনে হলে এ ধরনের উদ্যোগও নিতে পারেন কেউ কেউ।
প্রশ্ন: যারা মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইছে তাদের ব্যাপারে কি পরামর্শ দিবেন? আফরোজা হাসান: নিজেই নিজের মেকাপ করা আর অন্যের মেকাপ করিয়ে দেয়া দুটো এক নয়। অন্যকে মেকাপ করিয়ে দেয়া বেশ কঠিন। আর তার কারণ হলো মানুষের চেহারার বৈশিষ্ট্যের তারতম্য। অন্যকে মেকাপ করিয়ে দেয়ার আগে হাইজিন, ফেসিয়াল ফিচারস এবং স্কিন ইস্যু, কোন ত্বকের জন্য কোন ধরণের মেকাপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে এবং কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে সেটা জেনে রাখা প্রয়োজন। আর অবশ্যই মেকাপটাকে পেশা হিসেবে নিতে হবে ভালোবেসে, অন্য কিছুর জন্য নয়।
স্বাধীন বাংলা ডট কম
মো. খয়রুল ইসলাম চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও ঢাকা-১০০০ হতে প্রকাশিত ।
প্রধান উপদেষ্টা: ফিরোজ আহমেদ (সাবেক সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়)
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ডাঃ মো: হারুনুর রশীদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: খায়রুজ্জামান
বার্তা সম্পাদক: মো: শরিফুল ইসলাম রানা
সহ: সম্পাদক: জুবায়ের আহমদ
বিশেষ প্রতিনিধি : মো: আকরাম খাঁন
যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি: জুবের আহমদ
যোগাযোগ করুন: swadhinbangla24@gmail.com